বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যেমন জাতিকে ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ করেছিলেন, আজ তারই উত্তরসূরি তারেক রহমানও প্রবাসে থেকে সেই ঐক্যের আহ্বান জানাচ্ছেন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, সেটির ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন তারেক রহমান। তিনি জাতিকে নতুন আশার দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন।”
রোববার (২ নভেম্বর) বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় নয়াপল্টনে আয়োজিত ‘৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার বিপ্লব দিবস’ উপলক্ষে আলোচনা সভা শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “৭ নভেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাসে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি দিন। বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে যখন মানুষ হতাশ, তখন এই দিনটি আমাদের ঐক্যের বার্তা স্মরণ করিয়ে দেয়। দেশের শত্রুরা আজও বিভ্রান্তি ও মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চাইছে—এই প্রেক্ষাপটে ৭ নভেম্বরের চেতনা আরও প্রাসঙ্গিক।”
তিনি বলেন, “১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার ঐক্যে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বন্দিদশা থেকে মুক্তি পান। দেশবিরোধী চক্র তাকে বন্দী করে রেখেছিল। দেশপ্রেমিক সৈনিক ও জনগণ তাকে মুক্ত করে আনে—সেখান থেকেই শুরু হয় বাংলাদেশের পুনর্গঠনের নতুন অধ্যায়।”
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, “শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান অল্প সময়ে দেশকে এমন অবস্থানে নিয়ে যান, যেখানে আগে যাকে ‘বটমলেস বাস্কেট’ বলা হতো, সেই বাংলাদেশ আত্মনির্ভরতার পথে যাত্রা শুরু করে। তার আমলেই শুরু হয় জাতীয় পুনর্জাগরণ—একটি সম্ভাবনাময় বাংলাদেশের সূচনা।”
তিনি উল্লেখ করেন, “১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংস হামলার পর ২৬ মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। এরপরের বছরগুলোতে আওয়ামী লীগের একদলীয় শাসন, প্রশাসনিক ব্যর্থতা ও দুর্নীতির কারণে দেশ ভয়াবহ দুর্ভিক্ষে পড়ে—লাখো মানুষ অনাহারে মারা যায়।”
ফখরুল বলেন, “৭৫ সালের পর শহীদ প্রেসিডেন্ট বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করেন। তার যুগে গার্মেন্টস শিল্প, প্রবাসী শ্রমবাজার ও রেমিট্যান্স প্রবাহের সূচনা হয়, যা আজ বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম ভিত্তি। কৃষি, নারীশিক্ষা ও শিল্পোন্নয়নেও তিনি যুগান্তকারী ভূমিকা রাখেন।”
তিনি বলেন, “যদিও ১৯৮১ সালে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে হত্যার মাধ্যমে দেশ এক বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হয়, তার আদর্শ ও দর্শন আজও জীবিত। তার ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ’-এর দর্শন কখনও পরাজিত হয়নি। বিএনপিও সেই আদর্শে অটল থেকে বারবার নতুন শক্তিতে ফিরে এসেছে।”
শেষে ফখরুল বলেন, “৭ নভেম্বর আমাদের জাতীয় ও রাজনৈতিক জীবনে এক মাইলফলক। এই দিনের চেতনা থেকেই জেগে উঠেছিল জাতির আশা ও আত্মবিশ্বাস। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের দর্শন ও নীতিকে সামনে রেখেই আমরা এগিয়ে যাবো—গণতান্ত্রিক, স্বাধীন ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের লক্ষ্যে।”
এলএনডি/এমআর






