দুর্নীতির মামলায় আদালতে হাজিরা শেষে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে কারাগারে নেওয়ার সময় প্রিজনভ্যানে এক পুলিশ সদস্যের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনাটি ঘটে সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে।
সকালে সকাল ৯টা ১৮ মিনিটের দিকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ইনুকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে তাকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। তবে ওইদিন শুনানিতে তাকে এজলাসে তোলা হয়নি, কারণ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদন জমা দিতে পারেননি। এ কারণে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ সাব্বির ফয়েজ পরবর্তী শুনানির তারিখ ২ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করেন।
পরে ইনুকে কারাগারে নেওয়ার জন্য ১২টা ১৪ মিনিটের দিকে প্রিজনভ্যানে তোলা হয়। ওঠার পর তিনি প্রিজনভ্যানের ভেতর দাঁড়িয়ে ছিলেন। তার দাঁড়িয়ে থাকাতে আপত্তি জানিয়ে এক পুলিশ বলেন, ‘দাঁড়িয়ে থাকা যাবে না।’ এ সময় এ সংক্রান্ত আদেশ দেখাতে বলেন ইনু। তখন ওই পুলিশ সদস্যের সঙ্গে তিনি তর্কেও জড়ান। ইনু বলেন,‘আমি দাঁড়িয়ে থাকব কি করবেন আপনি? কি আইনে আমি দাঁড়িয়ে থাকতে পারব না।’
পুলিশ সদস্য আবারও বসার অনুরোধ করলে ইনু উত্তেজিত হয়ে বলেন, “আপনি যদি বলেন আমি দাঁড়াতে পারব না—তাহলে অর্ডার দেখান! কেন আপনি সিনক্রিয়েট করছেন?”
এরপর পুলিশ সদস্য প্রিজনভ্যানের পেছনে সরে যান। ভ্যানটি আদালত প্রাঙ্গণে থাকা অবস্থায় ইনুকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তিনি ভ্যানের গ্রিল দিয়ে বাইরে তাকিয়ে কিছু খোঁজার চেষ্টা করছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। কিছুক্ষণ পর পুলিশ সদস্য আবারও তার পাশে এসে দাঁড়ান এবং পরবর্তীতে তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৬ আগস্ট হাসানুল হক ইনুকে উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর তাকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডে নেওয়া হয়। দুদক গত ১৬ মার্চ তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা করে এবং ২৭ জুলাই ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে, তিনি ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ৪ কোটি ৮৪ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তার চারটি ব্যাংক হিসাবে প্রায় ১১ কোটি ৮৮ লাখ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে।
এছাড়া, আরেক মামলায় ইনুর স্ত্রী আফরোজা হকের বিরুদ্ধে ১ কোটি ৪৯ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, ইনুর উপার্জিত অর্থের মাধ্যমেই তার স্ত্রী সম্পদশালী হয়েছেন।
এলএনডি/এমআর






