সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম আদালতকে জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনো বিতর্ক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি। একই সঙ্গে কোনো সাক্ষী তার নাম বললে আদালত যে শাস্তি দেবেন তা মাথা পেতে নেবেন বলেও জানান তিনি।
রাষ্ট্রদ্রোহের এক মামলায় সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানার আদালতে গ্রেপ্তার দেখানোর শুনানিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক সৈয়দ সাজেদুর রহমান তার গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কারাগার থেকে আদালতে আনা হয় জাহাঙ্গীর আলমকে। তখন তাকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। সকাল ১০টা ২৫ মিনিটের দিকে তাকে হাজতখানা থেকে আদালতে আনা হয়। এসময় তার মাথায় হেলমেট, গায়ে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট এবং হাত পিছমোড়া করে হ্যান্ডকাফ পরানো ছিল।
তার আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রাখী আদালতকে বলেন, “তিনি ২০২২ সালে সচিব ছিলেন, এটাই কি তার অপরাধ? এই মামলায় তাকে যেন গ্রেপ্তার দেখানো না হয়।”
পরে অনুমতি নিয়ে জাহাঙ্গীর আলম নিজেই বলেন, “২০২৪ সালের নির্বাচন নিয়ে কোনো অভিযোগ বা বিতর্ক মিডিয়াতে এসেছে কি না? যদি এসে থাকে, তাহলে আমি যে শাস্তি পাব তা মাথা পেতে নেব। বিদেশি পর্যবেক্ষকরা কি এ ধরনের কোনো প্রতিবেদন দিয়েছেন? আবার ১৬৪ বা ১৬১ ধারার কোনো জবানবন্দিতে কি আমার নাম আছে? যদি থাকে, তাহলে আমাকে যে সাজা দেওয়া হবে, আমি মেনে নেব।”
শুনানি শেষে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, গত ২২ জুন বিএনপি অভিযোগ করে যে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়ে উল্টো ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে জনগণের ভোট ছাড়া নির্বাচন সম্পন্ন করেছে। এ অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং গুম-খুন ও তথ্য সংরক্ষণ সমন্বয়ক সালাহ উদ্দিন খান, যিনি সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা।
পরে মামলায় দণ্ডবিধির ১২৪(ক), ৪২০ ও ৪০৬ ধারায় অভিযোগ যোগ করা হয়। মামলার আসামির তালিকায় রয়েছেন—২০১৪ সালের সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, ২০১৮ সালের সিইসি এ কে এম নূরুল হুদা, ২০২৪ সালের সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, এবং সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, এ কে এম শহীদুল হক, জাবেদ পাটোয়ারী, বেনজির আহমেদ ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
এজাহারে বলা হয়, ওই তিন নির্বাচনে গায়েবি মামলা, গুম, খুন, নির্যাতনের ভয় দেখিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যাপকভাবে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া সরকারি কর্মচারী হয়েও অবৈধভাবে ভোটে হস্তক্ষেপ করা, ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, ভোট ছাড়া সংসদ সদস্য ঘোষণা করা সংবিধান ও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের শামিল এবং তা দণ্ডনীয় অপরাধ।
সাক্ষী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে না-পারা সাধারণ ভোটার, কেন্দ্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য এবং অনেক সৎ প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
এলএনডি/এমআর






