সিলেটের সাদাপাথর ও জাফলং এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পর্যটন সম্ভাবনা দীর্ঘদিন ধরে হুমকির মুখে ফেলেছে নির্বিচারে পাথর লুটপাট। এ পরিস্থিতি সামাল দিতে অবশেষে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
আগামী মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) থেকে শুরু হবে প্রশাসনের বিশেষ ‘চিরুনি অভিযান’, যা চলবে টানা যতদিন না পুরো এলাকা অবৈধ পাথরমুক্ত হয়।
অভিযানের লক্ষ্য
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ অভিযানে মূলত—
- মাটির নিচে চাপা দিয়ে রাখা বা গোপনে লুকানো অবৈধ পাথর উদ্ধার,
- দখলদার, অবৈধ ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট সিন্ডিকেটের সদস্যদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা,
- উদ্ধার করা পাথরকে প্রাকৃতিক অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়া,
- এবং পর্যটনকেন্দ্রগুলোর স্বাভাবিক পরিবেশ পুনরুদ্ধার করা হবে।
অভিযানে জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর যৌথ বাহিনী অংশ নেবে।
প্রশাসনের সতর্ক বার্তা
জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারওয়ার আলম গণমাধ্যমকে জানান, প্রশাসনের দেওয়া তিন দিনের আল্টিমেটাম আগামী ২৫ আগস্ট শেষ হবে। এরপর যদি কেউ স্বেচ্ছায় লুট করা পাথর ফেরত না দেয়, তাহলে ২৬ আগস্ট থেকে কঠোর অভিযান শুরু হবে।
তিনি আরও বলেন, গত শনিবার (২৩ আগস্ট) থেকে রবিবার (২৪ আগস্ট) পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ ঘনফুট পাথর ফেরত দিয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তবে যাঁরা এখনো ফেরত দেননি, তাঁদের ছাড় দেওয়া হবে না।
কঠোর অবস্থান
জেলা প্রশাসক স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন—“পাথর লুটে জড়িত কেউই ছাড় পাবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যাতে কোনো রাজনৈতিক পরিচয় বা প্রভাব বিবেচনা না করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়। প্রকৃতির ক্ষতি যাঁরা করেছে, তাঁদের বিচারের মুখোমুখি হতেই হবে।”
সচেতন মহলের প্রতিক্রিয়া
স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছে, প্রশাসনের এ উদ্যোগ সিলেটের প্রকৃতি ও পর্যটন রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তাঁরা আশা প্রকাশ করেছেন, ভবিষ্যতে কেউ যেন আর সিলেটের প্রাকৃতিক সম্পদ ও পরিবেশের ক্ষতি করার সাহস না পায়, সে বিষয়ে প্রশাসন আরও সজাগ থাকবে।
এলএনডি/এমআর






