লাশ নিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেন মা : সেই ছেলে জীবিত উদ্ধার

সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলায় নিখোঁজ হওয়ার পর পরিবারের লোকজন ভুলবশত অন্য এক লাশকে নিজের সন্তানের বলে শনাক্ত করে দাফন করেছিলেন। কিন্তু ১৭ দিন পর পুলিশ জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেছে রবিউল ইসলাম নাইম (১৪) নামের ওই কিশোরকে।

গত শুক্রবার হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার সৈয়দপুর এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। রবিউল ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজার এলাকার গদিয়াচর গ্রামের কনাই মিয়ার ছেলে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, রবিউল স্থানীয় গোয়ালাবাজার-সংলগ্ন ব্রাহ্মণগ্রাম সুপ্রিম ফিলিং স্টেশন মার্কেটের বগুড়া রেস্টুরেন্টে কর্মচারী হিসেবে কাজ করত। গত ২৬ জুলাই হঠাৎ রেস্তোরাঁ থেকে নিখোঁজ হয় সে। এরপর ৩ আগস্ট মৌলভীবাজারের কুলাউড়া রেলস্টেশনের পাশের একটি ডোবা থেকে এক অজ্ঞাত কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। রবিউলের স্বজনরা লাশটি তাদের ছেলের বলে শনাক্ত করে দাফনও সম্পন্ন করেন।

তখন রবিউলের পরিবারের দাবি ছিল—রেস্তোরাঁর মালিক বুলবুল মিয়া তাকে হত্যা করে লাশ ফেলে দিয়েছেন। কিন্তু লাশ উদ্ধারের পর মামলা করতে চাইলে ওসমানীনগর ও কুলাউড়া থানার গড়িমসিতে ক্ষুব্ধ হয়ে ৬ আগস্ট নিহতের স্বজনরা মহাসড়ক অবরোধ করেন।

অবশেষে ১৭ দিন পর রবিউলকে তার নানার বাড়ি সৈয়দপুর থেকে জীবিত উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় পরিবারের সদস্যরা কুলাউড়া থানায় খবর দিলে পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয় এবং শনিবার মৌলভীবাজার আদালতে জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য পাঠায়।

পুলিশ জানায়, রেস্তোরাঁর মালিকের সঙ্গে বিরোধের জেরে রবিউল আত্মগোপনে ছিল বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে কেন এবং কী কারণে সে পালিয়ে ছিল, তা আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছে।

এদিকে কুলাউড়ায় উদ্ধার হওয়া যে মরদেহ রবিউলের পরিবার দাফন করেছে, সেটি এখনো অজ্ঞাত রয়ে গেছে। পুলিশ বলছে, কেউ যদি লাশ শনাক্ত করতে আসে, তাহলে ডিএনএ পরীক্ষা ও ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওমর ফারুক কওমি জানান, রবিউলের নিখোঁজকে কেন্দ্র করে দায়ের হওয়া হত্যা মামলা স্বাভাবিকভাবেই নিষ্পত্তি হয়ে যাবে, যেহেতু রবিউল জীবিত উদ্ধার হয়েছে। তবে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত লাশের বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এলএনডি/এমআর